জেএসসি/জেডিসি রেজিষ্ট্রেশন এ ভুল ভ্রান্তি এড়াতে প্রতিষ্ঠান প্রধানের করণীয়
আজকে আমরা জানবো জেএসসি/জেডিসি রেজিষ্ট্রেশন এ ভুল ভ্রান্তি এড়াতে প্রতিষ্ঠান প্রধানের করণীয়। জেএসসি/জেডিসি রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠান প্রধানগণের কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় লক্ষ্য রাখলে জেএসসি/জেডিসি রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রমে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে এবং ভুল হয়না।
আশা করছি এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে এবং শক্ত হাতে দক্ষ কাউকে দায়িত্ব দিয়ে স্কুল বা মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণির রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম পরিচালনা করলে অনাকাঙ্খিত ভুল এড়ানো নম্ভব।
জেএসসি/জেডিসি রেজিষ্ট্রেশন
প্রতি শিক্ষাবর্ষে ৭ম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সাপেক্ষ্যে ৮ম শ্রেণিতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অথবা জুনিয়র দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য সকল শিক্ষাবোর্ডের নির্ধারিত নিয়মে রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম করতে হয়। অন্যথায়, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনা এবং শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি ঘটে।
যেহেতু প্রত্যেক শিক্ষাবোর্ড জেএসসি/জেডিসি রেজিষ্ট্রেশন এর তথ্যের আলোকে পরবর্তী পাবলিক পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন তথ্য সংগ্রহ করে তাই এই ধাপে কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জেএসসি/জেডিসি রেজিষ্ট্রেশনে প্রতিষ্ঠান প্রধান গণের কিছু বিষয় জানা অত্যাবর্শক
জুনিয়র স্কুল/দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষা ২০১০ সাল থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশের সকল শিক্ষাবোর্ডে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আমরা জানি অষ্টম শ্রেণিতে তথা জে.এস.সিতে যে তথ্য দেওয়া হয় সে তথ্যের আলোকে পরবর্তী স্তরে সে তথ্যই চলমান থাকে। কোন কারনে কোন শিক্ষার্থীর তথ্য ভুল হলে বিড়ম্বনার স্বীকার শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও প্রতিষ্ঠানকে। সব দিক ঘুরে সেই সকল ভুলের দায়ভার এসে পড়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানের ঘাড়ে। তাই প্রতিষ্ঠান প্রধানগণের কিছু বিষয় লক্ষ রাখা উচিত যা আলোচনা করা হল-
শিক্ষার্থীর নাম:
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী সনদ অনুযায়ী শিক্ষার্থীর নাম এন্ট্রি করতে হবে। প্রাথমিক সনদে শিক্ষার্থীর নাম সাধারণত বাংলায় লেখা থাকে, সেক্ষেত্রে ফনোটিক পদ্ধতি অনুসরণ করে নাম লিখতে হবে।
শিক্ষার্থীর পিতা ও মাতার নাম:
শিক্ষার্থীর পিতা মাতার নাম এন্ট্রি করার সময় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী সনদের সাথে মিল রেখে পিতা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে সংগতি রেখে লেখা উচিত। (তাহলে এই শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে বিড়ম্বনা থেকে বাঁচবে)
কোনো কারণে শিক্ষার্থীর অভিভাবককের জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে মিল না থাকলে তাহলে শিক্ষার্থীর অভিভাবককে অবহিত করে প্রাথমিক শিক্ষা সনদ সংশোধন করার জন্য পরামর্শ প্রদান করবেন। সংশোধন সম্ভব না হলে প্রাথমিক সনদ অনুসারেই এন্ট্রি দিবেন।লক্ষ রাখবেন-*
শিক্ষার্থীর নাম, পিতার নাম অথবা মাতার নামের সাথে কোনো প্রকার টাইটেল ব্যবহার করা যাবেনা। (যেমন: মিস, মিসেস, জনাব, মিঃ, মৌলভী, অালহাজ্ব, অধ্যাপক, ব্যারিষ্টার, ইঞ্জিনিয়ার, কর্ণেল, ড. ডা:, শ্রী, শ্রীমতি, কুমারী, বাবু, মৃত, মরহুম ইত্যাদি পদবী ব্যবহার করা যাবেনা)
পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী সনদ সংশোধন পদ্ধতি
শিক্ষার্থীর জন্ম তারিখঃ
নিয়মানুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষা সনদ অনুসরণ করে জন্ম তারিখ প্রদান করবেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রাথমিক শিক্ষা সনদে শিক্ষার্থীর বয়স অনেক বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে সনদ সংশোধন করে ডাটা এন্ট্রি করতে হবে।
লক্ষ্য রাখবেন-শিক্ষার্থীর বয়স ১১ বছরের বেশি এবং ১৭ বছরের নিচে হতে হবে। (শিক্ষার্থীর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার সনদে ভুল থাকলে অভিভাবক নিজ দায়িত্বে তা সংশোধন করবেন।)
শিক্ষার্থীর ছবি:
রেজিষ্ট্রেশনে ছবি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য। গত কয়েক বছর জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় দেখা গেছে পরীক্ষার স্বাক্ষর শীটে পরীক্ষার্থীর ছবি প্রিন্ট হয়।সুতরাং, সুন্দর ভাবে ছবি তুলে শিক্ষার্থীর ESIF ফরম পূরণ করা উচিত। উপরের তথ্যাবলি সুন্দরভাবে নেওয়ার জন্য একটি ESIF ফরম প্রস্তুত করে তথ্য সংগ্রহ করুন।
দায়িত্বশীল শিক্ষক/কর্মচারী দ্বারা তথ্য সংগ্রহ করাবেন। যদিও শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রাথমিক অনুসারেই শিক্ষার্থীদের ডাটা ইনপুট করতে হবে। তবুও ভবিষ্যৎ জটিলতা এড়াতে পিতা/মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সংগ্রহ করবেন।অনেক সময় দেখা যায় শিক্ষার্থীর পিতা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে মিল থাকেনা সেক্ষেত্রে অভিভাবক নিজ দায়িত্বে পিতা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের অালোকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী সনদ সংশোধন করতে হবে। নাহলে প্রাথমিক সনদের অালোকেই তথ্য ইনপুট করবেন।
আপনাদের সুবিদার্থে একটি ESIF Form দেওয়া হল। নমূনা ফরমটি ডাউনলোড করে নিন।
এই ফরমটি প্রিন্ট করে যতগুলো শিক্ষার্থী আছে সবাইকে প্রদান করুন। (শ্রেণি শিক্ষকের সহায়তায় পূরণ করার পর) অভিভাবক ও শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর গ্রহন করে একটি ফাইলে সংগ্রহ করুন।তথ্য সংগ্রহ করার পর নিন্মোক্ত কার্যাবলি গ্রহন করুন:
১। ESIF ফরমে সংগৃহীত তথ্যে আলোকে একটি TOT List প্রস্তুত করুন। (নমূনা ডাউনলোড করুন)
২। বোর্ডের প্রকাশিত রেজিষ্ট্রেশন বিজ্ঞপ্তি সংগ্রহ করুন। (সকল বোর্ডের জেএসসি রেজিষ্ট্রেশন বিজ্ঞপ্তি দেখুন
৩। বোর্ডের নির্ধারিত সময়ে ডাটা এন্ট্রি সম্পন্ন করুন। (সকল বোর্ডের সময়সীমা দেখুন)
৪। টেম্পরারী লিস্ট প্রিন্ট করুন: ডাটা এন্ট্রি শেষ হলে টেম্পরারী লিষ্ট প্রিন্ট করে শ্রেণি শিক্ষকের মাধ্যমে যাচাই করুন। টেম্পরারী লিস্টে শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর গ্রহন করুন।
৫। প্রয়োজনীয় সংশোধন করে পুনরায় আরেকটি টেম্পরারী লিস্ট প্রিন্ট করে পুনরায় যাচাই বাছাই করুন।
(মনে রাখবেন, এই তথ্যের উপর নির্ভর করবে ভবিষ্যৎ অন্যান্য স্তরের তথ্য, তাই একটু কষ্ট হলেও কয়েকবার যাচাই বাছাই করবেন।) চূড়ান্ত যাচাইয়ের পর ফাইনাল সাবমিট করবেন।
আরও দেখুন:
- ২০২০ সালের জেএসসি/জেডিসি রেজিষ্ট্রেশন বিজ্ঞপ্তি (সকল বোর্ড)।
- প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী সনদ কিভাবে সংশোধন করবেন।
- জেএসসি রেজিষ্ট্রেশন ও এডমিট কার্ড সংশোধন করার নিয়ম।
- সবার আগে কিভাবে জেএসসি ও এসএসসি ফলাফল জানবেন।
এই রকম গুরুত্বপূর্ণ নোটিশ পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন ও গ্রুপে যোগ দিন।
আইসিটি বিষয়ক বিভিন্ন টিউটোরিয়াল পেতে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন:
পড়ুনঃ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহকে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের সতর্কবানী
- মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান আয়োজন
- আনন্দধারা: সবাই মিলে বনভোজন আয়োজন
- সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতামূলক তথ্য উপস্থাপন
- কলেজ ভর্তি নিশ্চায়ন বাতিল আবেদন ফরম ও নিয়মাবলি
- প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিদ্যালয়ে এক জমকালো অনুষ্ঠান আয়োজন